Wellcome to National Portal

আঞ্চলিক পরিচালকের কার্যালয়, প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর, খুলনা ও বরিশাল বিভাগের ওয়েবসাইটে আপনাকে স্বাগতম

মেনু নির্বাচন করুন
Main Comtent Skiped

ঐতিহাসিক মসজিদের শহর বাগেরহাট

বাগেরহাট জেলায় অবস্হিত ষাটগম্বুজ ও এর পারিপার্শ্বিক এলাকায় বেশ কিছু মসজিদ, স্থাপনা, সমাধি, পুকুর ও প্রত্নতাত্ত্বিক ঢিবি রয়েছে । ষাট গম্বুজ মসজিদ এদের মধ্যে অন্যতম । ১৫ শতকের দিকে উলঘ খান-ই-জাহান এই মসজিদটি নির্মাণ করেন । এই প্রত্ন অঞ্চলটি ১৯৮৫ সালে ইউনেস্কো কর্তৃক ঐতিহাসিক মসজিদের শহর বাগেরহাট নামে বিশ্বঐতিহ্য কেন্দ্র হিসেবে ঘোষিত হয় । ষাট গম্বুজ মসজিদের পূর্ব দিকে একটি জাদুঘরও রয়েছে ।

 

ষাট গম্বুজ মসজিদ

 

মসজিদটিতে ৮১ টি গম্বুজ রয়েছে । মসজিদটি উত্তর-দক্ষিণে বাইরের দিকে প্রায় ১৬০ ফুট ও ভিতরের দিকে প্রায় ১৪৩ ফুট লম্বা এবং পূর্ব-পশ্চিমে বাইরের দিকে প্রায় ১০৪ ফুট ও ভিতরের দিকে প্রায় ৮৮ ফুট চওড়া। দেয়ালগুলো প্রায় ৮.৫ ফুট পুরু। জনশ্রুতি আছে যে, হযরত খানজাহান (রঃ) ষাটগম্বু^জ মসজিদ নির্মাণের জন্য সমুদয় পাথর সুদুর চট্রগ্রাম, মতামত্মরে ভারতের উড়িষ্যার রাজমহল থেকে তাঁর অলৌকিক ক্ষমতা বলে জলপথে ভাসিয়ে এনেছিলেন। ইমারতটির গঠন বৈচিত্রে তুঘলক স্থাপত্যের বিশেষ প্রভাব পরিলক্ষিত হয়। এ বিশাল মসজিদের চতুর্দিকে প্রাচীর ৮ফুট চওড়া, এর চার কোনে চারটি মিনার আছে। দক্ষিণ দিকের মিনারের শীর্ষে কুঠিরের নাম রোশনাই কুঠির এবং এ মিনারে উপরে উঠার সিড়ি আছে। মসজিদটি ছোট ইট দিয়ে তৈরী, এর দৈর্ঘ্য ১৬০ফুট, প্রস্থ ১০৮ ফুট, উচ্চতা ২২ফুট। মসজিদের সম্মুখ দিকের মধ্যস্থলে একটি বড় খিলান এবং তার দুই পাশে পাঁচটি করে ছোট খিলান আছে। মসজিদের পশ্চিম দিকে প্রধান মেহরাবের পাশে একটি দরজাসহ মোট ২৬টি দরজা আছে। সরকারের প্রত্নতত্ত্ব ও যাদুঘর বিভাগ পুরাকীর্তি হিসেবে সংরক্ষণের জন্য এ ঐতিহাসিক মসজিদ এবং খানজাহান (রঃ) এর মাজার শরীফের দায়িত্বভার গ্রহণ করেছে । ইউনেস্কো এ মসজিদটি বিশ্ব ঐতিহ্য তালিকায় অমত্মর্ভূক্ত করেছে।

 

সিংগাইর মসজিদ

 

ষাটগম্বুজ মসজিদের দক্ষিণ-পূর্ব কোনে মধ্যযুগীয় এই মসজিদটি অবসিহত। এটি একগম্বুজ বিশিষ্ট একটি মসজিদ। মসজিদের (বাইরের দিকের ১১.৮৮ মিঃ ঢ১১.৮৮মিঃ) পলেসত্মরা বিহীন দেয়ালগুলো গড়ে ২.১০মিঃ পুরম্ন। প্রত্যেক কোনে বাইরের দিকে গোলাকারে বর্ধিত একটি করে সংলগ্ন বুরুজ রয়েছে। পূর্ব দেয়ালে খিলান দরজার সংখ্যা ৩টি। উত্তর ও দক্ষিণ দেয়ালের প্রতিটিতে খিলান দরজার সংখ্যা ১টি। পূর্ব দেয়ালের মাঝের খিলানটির আকার অন্যগুলোর চেয়ে বড়। ভিতরে পশ্চিম দেয়ালের মাঝামাঝি অংশে দুপাশে দুটি কুলঙ্গীসহ একটি অবতল মিহরাব আছে। অনুরূপ কুলঙ্গী উত্তর ও দক্ষিণের দরজাগুলোর দুপাশেও আছে। অন্যান্য সাধারণ বৈশিষ্ট্য ষাটগম্বুজ মসজিদের অনুরূপ। কেবলমাত্র চার কোনের চারটি সংলগন গোলাকার বরম্নজ মসজিদের কার্ণিস পর্যন্ত উঠানো।

 

নয়গম্বুজ মসজিদ

ঠাকুর দিঘী বা খাঞ্জেলী দিঘীরপশ্চিম পাড়ে ১৬.৪৫ মিঃX১৬.১৫মিঃ ভূমি পরিকল্পনায় নির্মিত নয়গম্বুজ মসজিদটি অবসিহত। এর দেয়ালগুলো ২.৫৯মিঃ পুরম্ন। মসজিদ অভ্যমত্মরে দুসারি পাথরের থাম দিয়ে মোট নয়টি চৌকো খন্ডে বিভক্ত । প্রতিটি খন্ডের উপর মসজিদের ছাদের নয় গম্বুজ নির্মিত। পশ্চিমের কিবলা দেয়ালে নির্দিষ্ট দুরতব পর পর একটি করে মোট তিনটি অবতল মিহরাব আছে। এগুলোর টিম্প্যানাম ও স্প্যানাড্রল অংশে পোড়ামাটির কারম্নকাজ লক্ষ করা যায়।

 

সাবেকডাঙ্গা পূরাকীর্তি

ষাটগম্বুজ মসজিদ থেকে প্রায় ৬কিঃমিঃ উত্তরে এই পূরাকীর্তিটি অবসিহত। দক্ষিণমূখী এই পূরাকীর্তিটি আয়তাকার ভূমি পরিকল্পনায় নির্মিত (৭.৮৮ মিঃX৫.১০মিঃ)। এটি একটি প্রার্থনা কক্ষ। এর ইটের দেয়াল ১.৪৭ মিঃ পুরম্ন। পুরাকীর্তির কার্ণিশ ধনুকের ন্যায় বক্র এবং ভিতরের দেয়াল পোড়ামাটির ফুল-লতা-পাতার অপূর্ব কারম্নকাজে ভরপুর। সহাপত্য কৌশলে মনে হয় এটি খানজাহান সময়ের পরবর্তীকালে নির্মিত।

 

জিন্দাপীর মসজিদ

জিন্দাপীর মাজার কমপ্লেক্সের উত্তর-পশ্চিম কোনে মধ্যযুগীয় এই মসজিদটি অবসিহত। মসজিদটি বর্গাকার ভূমি পরিকল্পনায় (৬মিঃX৬মিঃ) নির্মিত এটি একগম্বুজ বিশিষ্ট মসজিদ। এই মসজিদের চারপাশের চারটি গোলাকার বুরম্নজ রয়েছে।মসজিদের দেয়ালগুলো গড়ে ১.৫২মিঃ পুরম্ন। পূর্ব বাহুতে ৩টি, উত্তর ও দক্ষিণ বাহুতে একটি করে খিলান দরজা আছে। সামনের বাহুতে আছে তিনটি মিহরাব। ছাদের অর্ধগোলাকার গম্বুজটি ভাঙ্গা অবসহায় ছিল। ২০০২ সালে এটিকে প্রত্নতাত্তিক সংস্কারের মাধ্যমে পূর্ন অবয়ব প্রদান করা হয়েছে।

 


'‌প্রত্নসম্পদ একটি দেশের অতীত ঐতিহ্যের বাহক' '‌প্রত্নসম্পদ জাতীয় সম্পদরক্ষার দায়িত্ব সকলের' 'পুরাকীর্তি আইন সম্পর্কে সচেতন হোন'